বন্ধুত্ব থেকে জীবনসঙ্গী।। অনেক সুন্দর একটি প্রেম কাহিনী // Bengali Love Story Posted on April 16, 2020 0 → বন্ধুত্ব থেকে জীবনসঙ্গী.সেই কখন থেকে আমার বোন মেঘলা টাকার জন্য কানেরকাছে ঘ্যানঘ্যান করছে। মাথার নিচ থেকে বালিশটাকানে চেপে ধরলাম কিন্তু শয়তান বোনটা বালিশটানিয়ে গেলো। এই মেঘলাটার জন্য আমার সকালের ঘুমহারাম হয়ে যায়। প্রতিদিন সকালে কিছু না কিছু নিয়েআমার কাছে আসবে আর ঘুমটাকে হারাম করে দিবে।আজকে আসছে টাকার জন্য আরে বাবা আমি কি চাকরীকরি। চাকরি করলে সমস্যা ছিলো না। আমি বাবার কাছথেকে চেয়ে চেয়ে নেই আর উনি আসছে আমার কাছে।আমি বললামঃ বোনরে বাবার কাছে গিয়ে বল উনিনিশ্চয় দিবে। কে শুনে কার কথা মাঝখানে আমার ঘুমেরবারোটা বাজিয়ে দিলো। অনেক রাত করে ঘুমিয়েছিঘুমটাও হলো না এই মেয়েটার জন্য। আমি মেঘলারকোনো কথা না শুনে জোরে জোরে আম্মুকে ডাকদিলামঃ আম্মু দেখো তোমার মেয়ে আমার কাছে টাকাচাইতে আসছে। দুই মিনিট পর আম্মু রুমে এসে বললোঃ কিহইছে গণ্ডারের মত চিল্লাচিল্লি করতেছিস কেন? আমিঅনেকটা অবাক হয়ে বললামঃ ধুর বাবা নিজের ছেলেকেগণ্ডার উপাধি দিলো। গণ্ডার বলছে তো কি হইছেনিজেকে শক্ত করতে হবে তা নাহলে আজকে আমারমানিব্যাগ শেষ হয়ে যাবে। আর কোনোকিছু ভাবাভাবিনা করে বিছানা ছেড়ে ফ্রেশ হতে চললাম আম্মু কান ধরেএনে বললোঃ মেঘলার টাকাটা দিয়ে তারপর ফ্রেশ হতেযান। আমি কাঁদোকাঁদো ভাবে বললামঃ আম্মু আগে কানছাড়ো তারপর দিচ্ছি। পাশে দাঁড়ানো আমার বোনমেঘলা আমার অবস্থা দেখে খিলখিল করে হাসছে। আমিচোখটা বড় করে মা যাতে না শুনে সেইভাবে বললামঃ চুপথাক শয়তান। আমার চোখ দেখে মেঘলা মায়ের কাছেকাঁদোকাঁদো গলায় বললোঃ আম্মু দেখছো তোমার ছেলেআমাকে ধমকি দিচ্ছে। আমি একটু সামনে গিয়ে মেঘলারমাথায় হাত দিয়ে বললামঃ ধুর মেঘলা আমি কি তোকেধমক দিতে পারি। আমার মুখে হাসি আসছে না তারপরওএকটু অভিনয় করে হাসি দিয়ে বললামঃ আচ্ছা তোর কতটাকা লাগবে?ঝটপট মেঘলা বলে দিলোঃ পাঁচশত টাকা লাগবে।মেঘলার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। আমিঅনেক ভেবেচিন্তে আম্মুকে বললামঃ আম্মু তোমাকেমনে হয় বাবা ডাকতেছে তুমি যাও আমি মেঘলাকেটাকাটা দিয়ে দিবো। আম্মুর কাছে আমি বরাবরই ধরাখেয়ে যাই টাকা না দিয়ে আমাকে আজ ছাড়বে এইটাআমি বুঝে গেছি। কি আর করা মানিব্যাগ খুলে দেখি ৫২০টাকা। কাল রাতে বাবার কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিলামএখন আবার কি করে টাকা চাই। যাই হোক টাকাটামেঘলাকে দিয়ে দিবো। টাকাটা অর্ধেক মেঘলার হাতেআর অর্ধেক আমার হাতে কিছুতেই ছাড়তে ইচ্ছে করতেছেনা। মেঘলা বললোঃ ভাইয়া টাকাটা ছাড় না আমারদেরি হয়ে যাচ্ছে। আমি ছেড়ে দিলাম আর উনি নিয়েগেলো। আম্মু আর মেঘলা রুম থেকে হাসতে হাসতে বেরহয়ে গেলো। ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি আদিবার ৭ টা মিসডকল। মোবাইল সাইলেন্ট করা ছিলো আর উনি তো ভাববেইচ্ছে করে ধরিনি। আদিবা হলো আমার বেষ্ট বান্ধবী।তাকে ছাড়া আমার দিন যায় না। আমাকে ছাড়াওআদিবার দিন যায় না। বেকার ছেলেদের কপালে সুখ নাইমনে মনে বলতে বলতে রুম থেকে বের হইলাম। তারপরআম্মুর উদ্দেশ্যে বললামঃ আমাকে কি কেউখাবারদাবার দিবে? প্রথম অবস্থায় কোনো সাড়াশব্দআসলো না তাই আবার বললামঃ আমাকে কি কেউ চারটেভাত দিবে। আম্মু রুম থেকে এসে বললোঃ আমার হাতেআর কত খাবি এবার অন্যকিছু চিন্তা কর। আমি অসহায়েরমত বললামঃ আজ বউ নাই বলে। আম্মু মুখে হাত দিয়েহাসতে লাগলো। খাওয়ার মাঝখানে ফোনটা কেঁপেউঠলো। আদিবার ফোন, হাত ধুয়ে ফেললাম। আম্মু অবাকহয়ে বললোঃ হাত ধুয়ে ফেললি কেন? আমার তাড়া আছেআমি গেলাম। এই বলে আমি বাসা থেকে বের হইলামউদ্দেশ্য আদিবার কাছে যাওয়া। মিনিট ১০ মিনিট পরআদিবার কাছে গেলাম। গিয়ে দেখলাম মেয়েটা গালফুলিয়ে বসে আছে। আমি আস্তে আস্তে বললামঃঅনেক্ষণ ধরে বসিয়ে রাখার জন্য সরি। আমার কোনোকথার উত্তর দিচ্ছে না আদিবা। তারপর কান ধরেবললামঃ এইবার দেখ কান ধরছি। আদিবা একটু মুচকিহাসিয়ে দিয়ে কান থেকে আমার হাতটা সরিয়ে তারপাশে বসালো। অনেক্ষণ চুপ থাকার পর আদিবা বললোঃতা আপনার এত দেরি হওয়ার কারণ কি? আমি মনটাখারাপ করে বললামঃ ঘরে যদি ছোট বোন থাকে তাহলেদেরি হবেই। আমার কথা শুনে আদিবা হাসতে শুরু করলো।আমি বললামঃ পুরো ঘটনাটা আগে শোন তারপর হাসিস।অনেকদিন পর কাল রাতে ফেইসবুকে ঢুকলাম গিয়ে দেখিএকটা অচেনা মেয়ের মেসেজ। তারপর রিপ্লে দিলামএইভাবে কথা বলতে বলতে রাত ৩ টা বেজে গেছে তারপরসকাল সকাল এসে আমার শয়তান বোনটা ঘুমকে হারামকরে দিলো। বায়না ধরলো পাঁচশত টাকা দিতে হবে এইহলো ঘটনা। আদিবা চুপ করে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো।আদিবার চুপ থাকা দেখে কিছুই বুঝলাম না বললামঃ কিরে চুপচাপ কেন? তাও আবার অন্যদিকে তাকিয়ে?কোনো কথার উত্তর দিলো আদিবা। আমি বললামঃএদিকে তাকা বলছি প্রথম অবস্থায় না তাকালেওদ্বিতীয় বার বলার পর তাকালো। আদিবা তাকাতেইআমি অনেকটা অবাক হইলাম। নিজের কাছে নিজেইপ্রশ্ন করলাম আদিবা কাঁদছে কেন?? তারপর আদিবাকোনো কথা না বলে আমার গলা চেপে ধরলো আরবললোঃ তুই মেয়েদের সাথে চ্যাট করিস কেন?? আমিবললামঃ তাতে তোর কি? আদিবা আমার গলায় আরোজোরে চেপে ধরলো। আমি আর না পেরে বললামঃ আচ্ছাঠিক আছে আর কোনো মেয়ের সাথে চ্যাট করবো নাএইবার তো গলা থেকে হাতটা সরা। আমি কাশতেকাশতে বললামঃ আরেকটু হলে তো মরেই যেতাম। তুই অন্যঅচেনা মেয়ের সাথে কথা বলবি কেন? যদি তোরে নিয়েযায়। আমি হো হো হো করে হেসে বললামঃ তুই আসলেইএকটা পাগলী। তারপর থেকে ও আমাকে কোনো মেয়েরসাথে দেখলে আমার উপর অনেক রাগ করে প্রয়োজন হলেধমক দেয়। বাসা থেকে বের হয় না। ফোন অফ করে দেয়।আদিবার এসব পাগলামো দেখে একদিন আমিও তারপ্রেমে পড়ে যাই। মনের মধ্যে একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছেআদিবা কি আমাকে ভালোবাসে নাকি শুধুই পাগলামি?আমি দুটানায় পড়ে গেলাম তাই সাহস করে কোনোদিনবলতে পারিনি কারণ যদি ভুল বুঝে। আদিবা কি আমাকেসত্যি সত্যি ভালোবাসে নাকি শুধু বন্ধু ভাবে। তারপরএকদিন আমি অভিনয় করে বললামঃ আদিবা বাসা থেকেআমার বিয়ে ঠিক করে ফেলছে। মেয়েটা ইন্টার ফার্স্টইয়ার বলতে পারলাম না তার আগেই আমার পাশ থেকেউঠে চলে যেতে লাগলো। আমি একটু দৌড়ে গিয়ে হাতটাধরলাম। আদিবার আমার দিকে ফিরতেই দেখলাম রাগেচোখমুখ লাল হয়ে গেছে আবার কাঁদছেও আমি হাসতেহাসতে বললামঃ পাগলী এতক্ষণ আমি যা বলছি সবটুকুছিলো অভিনয়। দেখলাম তুই আমাকে ভালোবাসিস কিনা। তারপর আদিবা আরো রেগে তেলে বেগুনে জ্বলেউঠলো আর বললোঃ এসব নিয়ে অভিনয় করলি কেন কুত্তা?বলতে বলতে আমায় জড়িয়ে ধরে বাচ্চা পোলাপানের মতকাঁদতে লাগলো। আমি বোকার মত হা করে এদিক ওদিকতাকিয়ে রইলাম আর দেখলাম কেউ দেখছে কি না।আশেপাশে তো কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। তারপরআমিও আদিবাকে জড়িয়ে ধরে বললাম আমি তোকেঅনেক অনেক ভালোবাসি।.আমার আর আদিবার ফ্যামিলির ওরা জানে আমরাদুজনেই শুধু বন্ধু তাছাড়া আর কিচ্ছু না। কিন্তু কখন যে দুজনদুজনকে ভালোবেসে ফেলছি জানি না। আমার প্রতিআদিবার ভালোবাসা দেখে আমিও তাকে ভালোবেসেফেলছি। আমি বুঝে গেছি আমার লাইফে এমন একজনকেদরকার। আর সেটা হলো আদিবা। মেয়েরা যাকে একবারসত্যিকারে ভালোবাসে তাকে ছাড়া জীবনে আরকাউকে ভাবতেই পারে না। জীবন সঙ্গী করলে একমাত্রতাকেই করবে।.এইভাবে আমার আদিবার সম্পর্ক আরো গভীর হতেলাগলো। একটা সময় আদিবার ফ্যামিলি থেকেআদিবাকে জোর করে বিয়ে দিতে চাইলো কিন্তু আদিবাতো আমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না। একদিনআদিবা আমাকে ফোন দিয়ে কাঁদোকাঁদো স্বরে বললোঃজাহিদ আমি তোকে ছাড়া আমার জীবনে আর কাউকেজায়গা দিতে পারবো না। প্লিজ তাড়াতাড়ি কিছু একটাকর। আদিবার কথা শুনে আমার চোখেমুখে অন্ধকারদেখছি। বেশ অসহায়ের মত বললামঃ তুই কোনো চিন্তাকরিস না আমি দেখতেছি। এইভাবে দেখতে দেখতেআরো ৩ দিন কেটে গেলো। কোনো ব্যবস্থা করতেপারলাম না। একদিন রাতে আমি আর মেঘলা ফাজলামোকরছিলাম ঠিক সেই মুহূর্তে আদিবা আমার সামনে কাপড়গুছানো ব্যাগ নিয়ে উপস্থিত। আদিবাকে দেখে বুঝাযাচ্ছে মেয়েটা মা-বাবাকে ছেড়ে একেবারে আমারকাছে চলে আসছে। এখন যদি আমি ফিরিয়ে দেই তাহলেতার একটাই পথ থাকবে আত্মহত্যা। আমি সবকিছুবিবেচনা করে দেখলাম বিষয়টা আমার মা-বাবাকেজানানো উচিত। তাই আদিবাকে নিয়ে মা-বাবার সামনেগেলাম। গিয়ে সবকিছু বুঝলাম। আর সন্তানের কথা মা-বাবা কখনো ফেলবে না এই আশ্বাস নিয়ে আসছি। প্রথমেমা-বাবা একটু আশ্চর্য হলেও পরে সব ঠিকঠাক। কালসকালে মা-বাবা গিয়ে আদিবার মা-বাবার সাথে কথাবলবে।.সকালে মা-বাবা গিয়ে আদিবার পরিবারের সাথে কথাবললো। প্রথমে রাজি না হলেও পরে অবশ্য রাজি হয়েযায়। আজকে যদি আমি আমার মা-বাবার কাছে নাগিয়ে আদিবাকে নিয়ে পালিয়ে যেতাম তাহলে দুইপরিবারের মানসম্মান মাটির সাথে মিশে যেতো। এতেহয়তো আমার মা-বাবা হার্ট এট্যাক না করলেও আদিবারপরিবারের কেউ করতো। ছেলেমেয়ে পালিয়ে গেলেছেলের চাইতে মেয়ের বাবার মানসম্মান বেশি যায়।এরকম ভুল অনেকেই করে। কমপক্ষে একবার হলেও মা-বাবাকে জানানো উচিত তারা যদি না মেনে নেয়তাহলে যেতে পারেন। মা-বাবা কখনো সন্তানের কথাফেলবেন না। Email ThisBlogThis!Share to XShare to Facebook
0 comments:
Post a Comment